ইসলামি শরিয়তের বিধান মতে সাধারণ মানুষের হাতে আইন তুলে নেওয়া অপরাধ
ইনসাফ বাংলা ইসলামি ডেস্ক : ইসলামী শরিয়তের সুস্পষ্ট বিধান অনুসারে, সাধারণ মানুষের জন্য আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অতএব, প্রচলিত গণপিটুনির কারণ যা-ই হোক কেন, ইসলামী শরিয়তে তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। এমন অপরাধে জড়িত সবাই আইনের আওতায় আসবে।
ওমর (রা.)-এর শাসনামলে দেখা যায়, একজন নিরাপরাধ বালককে হত্যা করার কারণে ওমর (রা.) ৭ ব্যক্তিকে কিসাসের শাস্তি দিয়েছেন। তাদের বাড়ি ছিল ইয়েমেনের সানাআয়। এ বিষয়ে ওমর (রা.) বলেছিলেন, ‘যদি সানাআর সব মানুষ মিলে হত্যা করতো তাহলে আমি সানাআর সব মানুষের ওপর কেসাসের হুকুম বাস্তবায়ন করতাম। অর্থাত্ সানাআর সব অধিবাসীকে হত্যা করতাম। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৮৯৬; নাসবুর রায়াহ : ৬/৩৬০; মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদিস : ১৫৭০)
ইসলামী শরিয়ত অপরাধের শাস্তি বাস্তবায়নের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে দিয়ে শেষ করেনি; এর সঙ্গে সন্দেহাতীতভাবে তা প্রমাণিত হওয়ারও শর্ত দিয়েছে। সুতরাং কোনো ব্যক্তির ব্যাপারে অভিযোগ পেলে তা প্রমাণের আগে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, রাষ্ট্রও তাকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার রাখে না। ইসলামী দণ্ডবিধির একটি মূলনীতি হলো, ‘সন্দেহ হদ বা শাস্তি রহিত করে। ’ (কাওয়াইদুল ফিকহ)
পাশাপাশি অপরাধের চেয়ে যেন শাস্তি বেশি হয়ে না যায়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা তাদের শাস্তি দিতে চাও তাহলে সেই পরিমাণ শাস্তি দাও, যতটুকু অন্যায় তোমাদের সঙ্গে করেছে…। ’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৬)
পরিশেষে, ইসলামী শরিয়ত আইন প্রয়োগের ক্ষমতা রাষ্ট্রের ওপর অর্পণ করেছে। তাই সাধারণ মানুষের জন্য আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই। আর এটাও সত্য যে রাষ্ট্রে যথাযথ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে সাধারণ মানুষের আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রয়োজন হয় না।